শীতকাল রচনা | আমার প্রিয় ঋতু (Sitkal Rochona) Class 3-7
![]() |
শীতকাল রচনা |
নমস্কার বন্ধুরা আজকে আমরা আলোচনা করবো আমার প্রিয় ঋতু অথবা শীতকাল রচনা (Sitkal Rochona) নিয়ে। আপনারা যারা শীতকাল রচনা Class 2, Class 3, Class 4, Class 5, Class 6 অথবা Class 7 গুলি সচরাচর খোঁজেন তাদের জন্য আজকের এই প্রতিবেদন। এই রচনাটি আমি ৭ টি ভাগে লিখেছি যথাক্রমে ভূমিকা, শীতকালের সময়সীমা, শীতকালের বৈশিষ্ট্য, শীতের সকাল, শীতের উপকারিতা, শীতের অসুবিধে এবং উপসংহার। আসুন তাহলে শুরু করা যাক রচনা শীতকাল (Bangla Rochona Sitkal)।
শীতকাল রচনা
ভূমিকা
ভারতবর্ষ ছয়টি ঋতুর দেশ। এই ছয়টি ঋতু পালা ক্রমে এসে প্রকৃতিকে নবরূপে সাজিয়ে তোলে। সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে তারা আসে আর যায়। বসন্ত ঋতুর আগে শীতের আগমন ঘটে। প্রকৃতিকে কুয়াশার চাদরে জড়িয়ে আবির্ভাব ঘটে শীতকালের। কবি লিখেছেন, "হিম হিম শীত শীত / শীত বুড়ি এলো রে / কনকনে ঠান্ডায় / দম বুঝি গেল রে।"
শীতকালের সময়সীমা
৬ টি ঋতুর মধ্যে ৫ম ঋতু হল শীত। পৌষ ও মাঘ এই দুই মাস নিয়ে হয় শীতকাল। ইংরেজি বর্ষপঞ্জি অনুসারে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীত কাল এর রমরমা চলতে থাকে।
শীতকালের বৈশিষ্ট্য
শীতকাল প্রধানত শুষ্ক এবং দিনের তুলনায় রাত বড় হয় । শীতকালের দিনে ও রাতে কুয়াশা ও শিশির পড়ে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি শীতকাল হলেও বাস্তবে নভেম্বর থেকেই হালকা শীত অনুভূত হয়। উত্তুরে হিমেল হাওয়া বইতে থাকে। ফলে শীতলতা বৃদ্ধি পায়। জানুয়ারি মাসের গড় তাপমাত্রা দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তর পূর্বাঞ্চলে 11 ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে শুরু করে উপকূলীয় অঞ্চলে ২০ ডিগ্রি থেকে 21 ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বজায় থাকে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ নগণ্য এই সময়।
Sitkal Rochona
শীতের সকাল
কুয়াশার চাদরে মোড়া শীতের সকাল হাড় হিম করা ঠান্ডা নিয়ে শুরু হয়। এসময় এক ফালি রোধ সকলের কাছে বহুল প্রতিক্ষীত। গ্রাম কিংবা শহর সব জায়গাতেই একটি ভিন্ন আমেজ তৈরি হয় এই শীতকালে। শীতের সকালে এক অজানা অলসতা ভর করে মানুষের মধ্যে। লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে থাকাতেই স্বর্গীয় সুখ অনুভূত হয়। গ্রামের মাঠে মাঠে শীতের কুয়াশা ভেদ করে চাষে নয়তো গবাদি পশুদের নিয়ে বের হয় কর্মঠ মানুষেরা। অনেকেই খড়কুটো জ্বেলে আগুন পোহায়। খেজুর রস সংগ্রহ কারীরা বেরিয়ে পড়ে তাদের কাজে। আবার এই সময় পাহাড়ি এলাকাগুলো বরফাচ্ছন্ন হয়ে থাকে। সারারাত তুষারপাতের পর সকালের দৃশ্য সত্যিই মনমুগ্ধকর।
শীতের উপকারিতা
শীতকালে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ হয়। যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, মটরশুঁটি, শিম, গাজর মুলো, বেগুন, পালংশাক ইত্যাদি। চাষিরা মাঠ থেকে নতুন ধান কাটে। এসময় নানা রকম ফুলও ফোটে, কমলালেবুর চাষ হয়। শীতকালীন মনোরম আবহাওয়া তে মানুষ বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতেও যায়। চড়ুইভাতি করে। এসময় মানুষের ক্লান্তি কম হয় বলে। অনেক বেশি পরিশ্রম করতে পারা যায়। পৌষ পার্বণ, বড়দিন, নতুন বছরের উৎসবে মানুষ মেতে ওঠে শীতকালে। ঘরে ঘরে খেজুর গুড়ের পিঠে পায়েস বড়দিনের কেক। ছোট থেকে বড় সবাই পছন্দ করে।
শীতের অসুবিধে
দরিদ্র ও বয়স্ক মানুষদের জন্য শীতকাল খুব একটা সুখদায়ক ঋতু নয়। অনেক বয়স্ক মানুষ শীতের তীব্রতা সহ্য করতে না পারায় প্রাণহানি ঘটে। আর দরিদ্র গৃহহীন মানুষের শীতের পোশাক, লেপ, কম্বল ও প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাবে খুবই কষ্টের মধ্যে দিন কাটাতে হয়। এসময় মশার উপদ্রব বাড়ে। ডেঙ্গুর মতো প্রাণঘাতী অসুখও ছড়ায় মারাত্মক ভাবে। শীতের শেষে বসন্ত রোগের ও প্রভাব দেখা যায়।
উপসংহার
নানা অসুবিধে থাকা সত্বেও বেশিরভাগ মানুষের কাছেই প্রিয় ঋতু হলো শীত। শীত আসে আমাদের প্রকৃতি কে বদলে দিতে? নতুন করে প্রকৃতিকে সাজিয়ে দেওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি হল শীত। শীতের রিক্ততা পুরনো পাতা ঝরিয়ে দিলেই নতুন পাতা নিয়ে আসে ঋতুরাজ বসন্ত। প্রতিবছর হেমন্তের পালাবদলে উদাসী কুয়াশার চাদর গায়ে শীত আসে বাংলার বুকে। বড়দিন আর নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর উৎসবে আর আনন্দে বরণ করা হয় শীতকে।