Bhai Phota Date 2023: ভাই ফোঁটা দেওয়ার নিয়ম, ভাতৃদ্বিতীয়া সময়সূচী
বন্ধুরা আজকের এই পোস্টে আমরা জানবো ভাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা দেওয়ার নিয়ম, ভাতৃদ্বিতীয়া সময়সূচী (Bhai Phota Date Time 2023), ভাইফোঁটার কিছু পৌরাণিক কাহিনি ও ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার শুভ সময় মা মুহূর্ত কখন ইত্যাদি সম্পর্কে।
ভাতৃদ্বিতীয়া সময়সূচী - ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার শুভ সময়
বাংলার ১৪৩০ ইংরেজির 2023 ভাতৃদ্বিতীয়া সময়সূচী, ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার শুভ সময় কখন তা নিচে দেওয়া হল।
এবছর ভাইফোঁটা তিথি পড়েছে বাংলা ২৮ শে কার্ত্তিক, ইংরেজি ১৫ ই নভেম্বর বুধবারে । দ্বিতীয়া তিথি শুরু হবে 27 শে কার্ত্তিক, ১৪ ই নভেম্বর মঙ্গলবার এ দুপুর 2:30 মিনিটে, থাকবে ১৫ ই নভেম্বর, বুধবার দুপুর 1:56 পর্যন্ত। তাই ভাইফোঁটা দেওয়ার শুভ সময় হল দুপুর 1:56 মিনিটের মধ্যে।
ভাই ফোঁটা দেওয়ার নিয়ম
কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে ভাই কে নিমন্ত্রণ জানান নিজের বাড়িতে বোন বা দিদি। নকশী কাঁথার কাজ করা সুতির আসনে ভাইকে বসানো হয় ফোঁটা দেওয়ার জন্য। ভাইফোঁটার জন্য কাঁসা বা পিতলের থালা ব্যবহার করতে হয়। ধান দূর্বা দিয়ে ভাইকে আশীর্বাদ করতে হয়। ঘরে আমপাতায় পাড়া কাজল চন্দন সাজিয়ে রাখা হয় ভাইয়ের সামনে। সঙ্গে থাকে ঘিয়ের প্রদীপ এবং শঙ্খ। মুখ মিষ্টি করানোর জন্য থাকে ভাইয়ের পছন্দের মিষ্টিও।
এরপর বোনেরা বাঁ হাতের কড়ে আঙ্গুলে কাজল নিয়ে এঁকে দেন ভাইয়ের ভুরুতে। এরপর ভাইয়ের কপালে চন্দনের ফোঁটা দেওয়ার সময় ছড়া কাটা হয়। বলা হয়, "ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যম দুয়ারে পড়ল কাঁটা, যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা।" চন্দনের ফোঁটা দেওয়ার পর শঙ্খ ধ্বনি মাঝে ধান দূর্বা দিয়ে ভাইকে আশীর্বাদ করা হয়।এটি বাংলার একটি বহু প্রাচীন উৎসব।
ভাইফোঁটার পৌরাণিক কাহিনি
কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় ভাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা। আমাদের পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও এই উৎসব পালিত হয়। তবে তার নাম আলাদা সেটি হল ভাইদুজ বা ভাইবিজ। পার্থক্য থাকলেও উদ্দেশ্য কিন্তু একটাই ভাইয়ের দীর্ঘায়ু, শুভ কামনা এবং জীবনের উন্নতি। ভাইফোঁটা রীতি বহু প্রাচীন। এক্ষেত্রে আমরা যম-যমুনার উপাখ্যান পেয়ে থাকি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী সূর্য এবং দেবী শঙ্কার সন্তান যম এবং যমী বা যমুনা। যমুনা নিজের ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়েছিলেন তার পর থেকেই উৎসব পালিত হতে শুরু করে। বলা হয় যমুনা নিজের ভাই যমকে একাধিকবার নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে ধর্মরাজ যম নিজের বোনের বাড়িতে আমন্ত্রণ রক্ষা করার জন্য যেতে পারতেন না। কার্ত্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে বাড়ির দ্বারে নিজের ভাই যম কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান যমী বা যমুনা। তিনি প্রসন্নতা এবং স্নেহের সঙ্গে সেই তিথিতে নিজের ভাইকে ফোঁটা দিয়েছিলেন এবং ভোজনও করিয়েছিলেন। এরপর থেকেই প্রচলিত হয় ভাইফোঁটা।
এছাড়াও ভাই ফোঁটাকে নিয়ে রয়েছে আরও একটি পৌরাণিক উপাখ্যান। নরকাসুর দৈত্যকে বধ এর পরে কৃষ্ণ যখন বাড়ি ফিরে এলেন তখন তাঁর বোন শুভদ্রা প্রদীপ জ্বেলে ফুল ফল মিষ্টি দিয়ে তার ভাইকে অভ্যর্থনা করলেন। এরপরে কৃষ্ণের কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খাইয়ে ছিলেন সুভদ্রা। পাশাপাশি কৃষ্ণের আরো সহস্র বছর বেঁচে থাকার কামনা করেছিলেন। বলা হয়, এরপর থেকেই ভাইফোঁটার সূচনা হয়।
সর্বশেষ কথা
বন্ধুরা আজকের প্রতিবেদন এই পর্যন্তই। ভাই ফোঁটা দেওয়ার আচার নিয়ম, ২০২৩ সালের ভাতৃদ্বিতীয়া তারিখ ও সময়সূচী ও ভাইফোঁটার পৌরাণিক কাহিনি সম্পর্কে জেনে আপনার কেমন লাগলো নিচে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন ভাইফোঁটা ভালো ভাবে কাটাবেন। আর্টিকেলটি শেষ অব্ধি পড়ার জন্য আপনাদের অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।